চকরিয়ায় বন রক্ষকের নেতৃত্বে চলছে বনভূমির অবৈধ দখল

মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:


কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জে বানায়নের প্রায় ৩শ উপকারভোগীর ৩৬ জনের ভোটে গঠন করা হয়েছে সামাজিক বনায়ন কমিটি। এ কমিটির বন রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিই বনভূমি দখল করে নির্মাণ করছে অবৈধ স্থাপনা।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বনবিট আওতাধীন (২০১৫-১৬ সন) এর সমাজিক বনায়ন ৯নং প্লটের পাগলিরবীল নামক এলাকায়।

জানা গেছে, সামাজিক বনায়ন সমিতির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলম (প্রকাশ মায়াতালম) এর নেতৃত্বে প্রায় ৩০ শতক সরকারী বনভূমি অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে। তারই পাশে প্রায় এক একর বনভূমিতে নতুন তাঁরের ঘেরা-বেড়া দিয়ে অবৈধভাবে দখল করেছে জাগের আহমদ নামের আরেক ব্যক্তি। যেখানে রয়েছে অজস্র বনের গাছপালা। ইতিপূর্বে সেখানে স্থাপন করেছে একটি ঘর। তারও আগে বনবিভাগের চোখ ফাঁকি দিতে রূপন করা হয় ফলের চারা। মোহাম্মদ আলম ডুলাহাজারা ৫ নং ওয়ার্ড বালুরচর এলাকার এবং জাগের আহমদ ৬ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ বালুরচর এলাকার বাসিন্দা।

সচেতন মহলের অভিমত, সরকার বন্যপ্রাণী রক্ষা, বনাঞ্চল উজাড়, বনভূমি দখল-বেদখল নিয়ে যখন হার্টলাইনে। ঠিক সে সময় অবৈধভাবে সরকারি বনভূমি দখল আর অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কখনো কাম্য হতে পারে না।

সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে এক মহিলা কাছে এসে জানান, মায়াতালম (মোহাম্মদ আলম) এর নেতৃত্বে এই বনভূমির উপর ঘরটি নির্মাণ করা হচ্ছে। অল্পস্বল্প ফলের গাছপালাও রূপণ করেছে। আমাদের সেখানে আপাততঃ থাকতে দিবেন। এর আগে আমরা নিকটস্থ বনভূমির উপর জাগের আহমদ নির্মিত ঘরে বসবাস করেছি। আমাদের নিজস্ব ভিটেমাটি নাই বলে আমরা তাদের ঘরে আশ্রয় নিয়েছি।

তিনি আরো জানান, বন বিভাগের লোকজন মাঝেমধ্যে এখানে আসা-যাওয়া করে। অনেক সময় বিভিন্ন স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান চালায়। কিন্তু জাগের আহমদ ও মোহাম্মদ আলমের সাথে ফরেস্ট অফিসের যোগাযোগ আছে। তাই তাদের দখল এবং স্থাপনা অবৈধ হলেও উচ্ছেদ করবে না।

এ ব্যাপারে বনভূমি দখলকারী জাগের আহমদ জানান, আমি অনেক আগে বসতিটি স্থাপন করেছি। তারের ঘেরা দেয়া বনভূমিতে ফলজ গাছও রূপন করেছি তবে বনায়নের কোন গাছ কাটছি না। অভিযুক্ত সামাজিক বনায়ন সমিতির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলম জানান, মহিলাগুলো অসহায় তায় ছোট্ট একটি বনভূমিতে তাদের থাকতে দিয়েছি। সেখানে ফলের গাছও রূপন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সামাজিক বনায়ন সমিতির সভাপতি কলিম উল্লাহ কলি এবং সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সরকারী বনভূমি অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণকরা অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আমাদের কোন আপত্তি নেই।

এ বিষয়ে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের নবাগত এসিএফ মোঃ আশিকুর রহমান জানান, সরকারি বনভূমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী যেই হউক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।